Blog Details

img
Share On

আন্তর্জতিক বাণিজ্য বা ব্যাংকিং এ সুইফ্ট নেটওয়ার্ক (SWIFT) একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

আমেরিকার সকল খবরদারির পেছনে দুইটি অস্ত্র কাজ করে।

একটি হলো সুইফ্ট নেটওয়ার্ক, অন্যটি ইউএস ডলার। আন্তর্জতিক বাণিজ্য বা ব্যাংকিং এ সুইফ্ট নেটওয়ার্ক (SWIFT) একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

অস্ত্র, পারমাণবিক বোমা, বিমানতরী কোনটাই এত গুরুত্বপূর্ণ নয়।

প্রশ্ন হলো, কি করে সেটা সম্ভব ?

আপনারা দেশি বিদেশী টিভি চ্যানেল বা পত্রিকায় দেখবেন যে আ মে রি কা র সাথে কারো বিবাদ হলেই তার উপর স্যাংকশন (sanction) বা অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা হয়। সেই অবরোধে কোন ট্যাংক, সৈন্য, জাহাজ - কিছুই লাগে না।

এই অবরোধের মূল শক্তি হলো আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সিস্টেম। বিভিন্ন দেশ বা কোম্পানি যখন বাণিজ্য করে, তখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে ডলার আদান প্রদান করতে হয় ব্যাংকিং চ্যানেলে। এগুলা এলসি (letter of credit), টিটি (telegraphic transfer) ইত্যাদিভাবে আদান প্রদান করে পণ্যের মূল্য চুকানো হয়। এসব লেনদেন নেটওয়ার্কের নামই হলো সুইফ্ট নেটওয়ার্ক।

আ মে রি কা কি করে এখানে অবরোধ আরোপ করে ? এর উত্তর হলো যে আমেরিকা বলে দেয় “অমুক” দেশ ইউএস ডলার ব্যবহার করতে পারবে না এবং এই নেটওয়ার্ক হতে তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যেমনটি করেছিলো ইরাক এবং লিবিয়াকে। যেমনটি করে রেখেছে ই রা ন, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং ভেনেজুয়েলাকে। এতে করে এসব দেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করতে পারে না আর। টাকা যদি আদান প্রদান না করা যায়, মাল বেচবে কি করে ?

ব্যাপারটা আরো সহজ করে বলতে গেলে এভাবে বলা যায় যে আপনার বাসায় ল্যাপটপ আছে, আপনার মোবাইল আছে অথচ আপনি ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন এবং কোনভাবেই ইন্টারনেটে কানেক্ট করতে পারবেন না। তখন কিভাবে ইন্টারনেটে যাবেন ? পারবেন না।

অনেকেই মনে করে যে ব্যাপারটা যদি এমনই হয়, তাহলে আমেরিকার সাথে বাণিজ্য না করে অন্য দেশের সাথে করলেই তো হয় ? তাই না ?

তাহলেই তো আর অবরোধ থাকলো না। ব্যাপারটা আসলে এত সহজ নয়। ইউএস ডলারে যেহেতু সব ট্রেড হয়, এসব ট্রেড বা বাণিজ্যের সেটেলমেন্ট বা ব্যাংকিং পাওনা নিষ্পত্তি হয় নিউ ইয়র্কে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে।

এক দেশ যখন অন্য দেশের সাথে বাণিজ্য করে, তখন এক দেশের রিজার্ভ হতে ডলার নিয়ে অন্য দেশের রিজার্ভে যোগ করা হয়।

আপনারা হয়তো ভাবছেন যে এক দেশের রিজার্ভ অন্য দেশে আ মে রি কানরা দেয় কেন ? কারণ হলো, সকল দেশের ইউএস ডলার রিজার্ভ নিউ ইয়র্কেই থাকে। বাংলাদেশেরও এখন যে ৩৪/৩৬ বিলিয়ন ডলার আছে, সেটা কিন্তু দেশে নাই, নিউ ইয়র্কেই আছে। সব দেশের বেলাতেই একই নিয়ম। আমরা যখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করি, তখন সেই হিসাবের খাতায় সেটা যোগ বিয়োগ হয়। আর কিছু না। আর বাজারে/মানি চেন্জারে/ব্যাংক হতে যে খুচরা ডলার আমরা কিনি, সেটা ওই রিজার্ভের সামান্য একটা অংশ যা সরকার বিভিন্ন সময় প্লেনে করে দেশে এনে বাজারের খুচরা চাহিদা মেটায়।

আ মে রি কা মূলতঃ পুরা বাজারটাকেই নিয়ন্ত্রণ করে। আবার যদি কোন দেশ এই নিয়ম না মেনে অবরোধকৃত কোন দেশের সাথে বাণিজ্য করতে চায়, তাহলে সেই দেশও বিপদে পড়ে। এই কারণেই কেউ ইরান, ভেনিজুয়েলার সাথে বাণিজ্য করতে পারে না।

তবে কিছু কিছু দেশ বার্টার বা লেনদেন পদ্ধতিতে তাদের সাথে বাণিজ্য করে যার অন্যতম হলো চীন।

এখন প্রশ্ন করতে পারেন যে আমেরিকা তাহলে চীনের উপর অবরোধ দেয় না কেন ? কারণ হলো আমেরিকা তার প্রতি বছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে বাজারের বন্ড ছাড়ে। যারা বন্ড কিনে তাদেরকে পরবর্তীতে সুদ সমেত আসল ফেরত দেয়। ইউএস বন্ডের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলো চীন। চীনারা এতই বেশি বন্ড কিনেছে তাদের রিজার্ভ আর আয় দিয়ে যে, আমেরিকা তাদের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ দিলে তারা খোলা বাজারে সব বন্ড বিক্রি করে দিয়ে স্বর্ণ, রৌপ্য আর অন্য দেশের কারেন্সি কিনতে শুরু করবে, এতে করে ইউএস ডলারের মান ধ্বসে যাবে। সেটা হলে বাকি সব দেশও একই কাজ করবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য। আমেরিকার জন্য যা হবে সুইসাইডের শামিল। এইজন্যই চীন আমেরিকার জন্য বিশাল এক যন্ত্রণা হওয়াতেও অর্থনৈতিক অবরোধ দেওয়া যাচ্ছে না।

আপনারা হয়তো এটাও প্রশ্ন করতে পারেন যে আমেরিকা তাহলে বন্ড ছাড়ে কেন ? ডলার এমনি এমনি ছাপালেই তো হয় ? ডলারের সুইফ্ট তো তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে, তাই না ? এর উত্তর হলো যে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক যা ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম নামে পরিচিত, তার মালিক আমেরিকাতে রাষ্ট্র বা দেশের মানুষ বা সরকার নয়। এটার মালিকানা প্রাইভেট। এর মালিকানায় আছে অন্যান্য কিছু প্রাইভেট ব্যাংক। যার নিয়ন্ত্রণে আছে মূলতঃ কিছু ইহুদি পরিবার। তারা করে সুদের ব্যবসা। এমনি এমনি ডলার তারা ছাপবে না। নিতে হলে সুদেই নিতে হবে।

ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সম্বন্ধে জানতে গুগল করুন, Federal Reserve Act 1913. আশ্চর্য্য হয়ে যাবেন। আপনার হাতে থাকা মোবাইল বা বাসার কম্পিউটার এক দারুণ অস্ত্র, আর রয়েছে গুগল। ভালোভাবে ব্যবহার করলে পৃথিবী সম্পর্কে আপনার ধারণা পাল্টে দেবে।

সূইফট কোড নম্বর

SWIFT

SWIFT-(Society for Worldwide Inter-bank Financial Telecommunications হচ্ছে বিশ্বব্যাপী আন্তঃব্যাংক অর্থনৈতিক বার্তা প্রেরণের নিমিত্তে গঠিত একটি সমিতি। সদস্য ব্যাংকগুলো নিয়ে এ'টি গঠিত। আন্তর্জাতিকভাবে অর্থনৈতিক বার্তা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে দ্রুততম পদ্ধতিতে এবং দক্ষতার সাথে সুইফট এর মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।

সুইফট ব্যবহারে খরচ কম। এটি দ্রুতগামী এবং টেলেক্স-এর চেয়ে অধিকতর নিরাপদ। সুইফট বার্তার জন্য নির্দিষ্ট ফিল্ড ও ফরমেট রয়েছে। এসব ফিল্ড/ফরমেটের অধীনে ঋণপত্র, সংশোধনী, তৃতীয় কোন ব্যাংকের ঋণ পত্র প্রেরণ, ঋণপত্র ট্রান্সফার, রিইমবার্সমেন্ট ক্ষমতা অর্পণ, রিইমবার্সমেন্ট দাবী উত্থাপন, ইত্যাদি ইস্যু/প্রেরণ করা যায়।

ব্যাংকে হাতে কলমে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই সুইফট কোড নাম্বার সঠিকভাবে না জানার কারণে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই LC জন্য নির্ধারিত কিছু সুইফট কোড নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

Category-7

MT 700 : Issue of a Documentary Credit

MT 701 : Issue of a Documentary Credit (For 2nd Page)

MT 705 : Pre-Advice of a Documentary Credit

MT 707 :Amendment to a Documentary Credit

MT 710 :Advice of a Third Bank's Documentary Credit.

MT 720 : Transfer of a Documentary Credit

MT 730 :Acknowledgement

MT 734 : Advice of Refusal

MT 740 : Authorisation to Reimburse

MT 742 : Reimbursement Claim

MT 747 : Amendment to an Authorisation to Reimburse

MT 750 : Advice of Discrepancy

MT 752 : Authorisation to Pay Accept or Negotiate

MT 754 : Advice of Payment/Acceptance/Negotiation

MT 756 : Advice of Reimbursement or Payment

MT 760 : Guarantee

MT 767 : Guarantee Amendment

MT 768 : Acknowledgement of a Guarantee Message

MT 790 : Advice of Charges. Interest and Other Adjustments

MT 791 : Request for Payment of Charges, Interest and Other Expenses

MT 792 : Request for cancelation

MT 795: Queries

MT 796 : Answers

MT 799 : Free Format Message