Blog Details

img
Share On

এক্সপোর্টের পেমেন্ট টার্মস্

আমি আমার দীর্ঘদিনের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে এক্সপোর্ট করতে যে পেমেন্ট টার্মস্ গুলো থাকে তা আলোচনা করবো।

আমরা হয়ত জানি যে, এক্সপোর্টের কোন পেমেন্ট হাতে হাতে দেয়া হয় না। সে পেমেন্ট হয় ব্যাংকের মাধ্যমে।

বাংলাদেশ থেকে পণ্য এক্সপোর্ট করে সাধারণত L/C(Letter of Credit) বা TT(Telegraphic Transfer)-এর মাধ্যমে আমরা পেমেন্ট পেয়ে থাকি।

L/C বিভিন্ন রকমের হয় এবং এতে পেমেন্ট টার্মস্ও বিভিন্ন রকমের হয়। আবার TT-তেও বিভিন্ন রকমের পেমেন্ট টার্মস্ দেয়া থাকে।

চলুন আমরা প্রথমে L/C নিয়ে কথা বলি। এলসি সাধারণত দুই রকমের হয়ে থাকে।

যথা-

1. Irrevocable L/C

2. Revocable L/C.

1. Irrevocable L/C:

যে L/C খোলার পর বায়ার তা বাতিল করতে পারে না বা তার কোন কিছুর পরিবর্তন করতে পারে না তাকে Irrevocable L/C বলে।

2. Revocable L/C:

যে L/C খোলার পর বায়ার সহজেই যেকোনো অজুহাত দেখিয়ে তা বাতিল করতে পারে বা তার ইচ্ছা মত পরিবর্তন করতে পারে তাকে Revocable L/C বলা হয়।

Irrevocable L/C ছাড়া কাজ করলে এক্সপোর্টারের জন্য অনেক ঝুঁকি থাকে ।

বাংলাদেশের এক্সপোর্টারদের সুবিধার জন্য বিশেষ এক ধরনের L/C আছে। তার নাম Back to Back L/C.

বায়ার এক্সপোর্টারকে যে L/C সরাসরি দিয়ে থাকে তার নাম Master L/C.

কাঁচামাল কেনার জন্য Master L/C থেকে সাপ্লায়ারদের নামে যে L/C খোলা হয় তার নাম Back to Back L/C.

একটা উদাহরণ দিলে Back to Back L/C সম্পর্কে আরও পরিস্কার ধারণা পাওয়া যাবে।

ধরুন, কোন এক বায়ার একজন এক্সপোর্টারকে ২৫০০০ পিস গার্মেন্টসের অর্ডার করল। প্রতি পিস গার্মেন্টসের দাম ৪ ডলার হিসেবে মোট ১০০০০০ ডলারের L/C দিল। এই L/C-এর নাম Master L/C.

আমরা জানি, গার্মেন্টস বানাতে কাপড়/সুতা, এক্সেসরিজ, প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। এগুলো নগদ টাকা দিয়ে কেনা যায়। আবার Master L/C থেকে ছোট ছোট এমাউন্টের আলাদা L/C খোলেও কেনা যায়। এই ছোট ছোট L/C গুলোকে Back to Back L/C বলা হয়।

এক্সপোর্ট করার পর বায়ারের ব্যাংক থেকে এক্সপোর্টারের ব্যাংক একাউন্টে Master L/C-এর পেমেন্ট আসে। সেই পেমেন্ট থেকে Back to Back L/C-এর পেমেন্ট গুলো সাপ্লায়ারদের ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

Back to Back L/C ওপেন করে কাপড়/সুতা, এক্সেসরিজ, প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি ইত্যাদি কিনলে এক্সপোর্টারকে নগদ টাকা বিনিয়োগ করার প্রয়োজন হয় না। এতে কম পুঁজি বিনিয়োগ করে একজন এক্সপোর্টার তার প্রোডাক্ট সহজেই এক্সপোর্ট করতে পারে। মূলতঃ এই কারনেই বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সপোর্টিং দেশ হিসেবে বিশ্বে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান দখল করে আছে।

L/C-তে বিভিন্ন রকমের পেমেন্ট টার্মস উল্লেখ থাকে। এক্সপোর্টারগণ সাধারণত L/C at sight এবং Deferred L/C এই দুই টার্মের L/C-তে কাজ করে।

At Sight L/C:

শিপমেন্ট করার পর এক্সপোর্টারের ব্যাংক থেকে শিপিং ডকুমেন্টস বায়ারের ব্যাংকে পাঠানো হয়। বায়ার তার ব্যাংক থেকে এই ডকুমেন্টস রিসিভ করার সাথে সাথেই তার ব্যাংক এক্সপোর্টারের ব্যাংকে পেমেন্ট পাঠিয়ে দিবে।

Deferred L/C:

এই L/C-তে বায়ার শিপমেন্ট ডকুমেন্টস পাওয়ার কত দিন পর তার পেমেন্ট দেবে তার উল্লেখ থাকে। তবে Deferred L/C-তে কাজ করলে এক্সপোর্টারের নগদ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়।

TT:

TT-তে কাজ করলে বায়ার আগেই পেমেন্ট দিয়ে দেয়। এক্সপোর্টার ব্যাংক থেকে পেমেন্ট রিসিভ করে তার গুডস্ প্রস্তুত করে। গুডস্ শিপমেন্ট করে শিপিং ডকুমেন্টস তার ব্যাংকে জমা দিবেন। এতে ব্যাংক জানতে পারবে যে গুডস্ শিপমেন্ট হয়েছে।