বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির তথ্য অনুযায়ী শতরঞ্জি, বিভিন্ন আকৃতির ঝুড়ি, পাটের তৈরি থলে, পাপোশ, টেরাকোটা, মোমবাতি, নকশিকাঁথা, পাখির খাঁচা, বাঁশ ও বেতের বিভিন্ন সামগ্রী, চামড়ার তৈরি মুদ্রার বাক্স, বেল্টসহ বিভিন্ন ধরনের হস্ত জাত পণ্য রপ্তানি করছেন উদ্যোক্তারা। দেশের ভিতরে ও বিদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকার বাজার আছে এ শিল্পের।
বিশ্বের ৫০টি দেশে বাংলাদেশী হস্তশিল্প পণ্যের বিকিকিনি চলছে। বৈশ্বিক জায়ান্ট ওয়ালমার্ট সহ বৃহৎ ক্রেতাদের দৃষ্টি এখন হস্তশিল্পে। করোনাকালে অন্যান্য খাত যখন হাবুডুবু খাচ্ছে তখন হস্তশিল্পের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ, যার প্রধান বাজার উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ।
এ পণ্যের দেশি বাজার প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার। ২০২৩ সালে হস্তশিল্পের বৈশ্বিক বাজারের আকার হতে পারে ৫২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে বিশ্ববাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকার মুখে দাম কমিয়েছেন হস্তশিল্পের বাজিমাত ক্রেতারা। দেশে কমেছে নগদ সহায়তা। তবু সংকট কাটাতে উদ্যোক্তারা মনে করেন কর কমিয়ে নগদ প্রণোদনা বৃদ্ধি ও থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ভারত, চীনের আদলে সরকারি সহায়তায় কারুপল্লী প্রতিষ্ঠা জরুরি।
উন্নত বিশ্বের ক্রেতাদের হাতে তৈরি পণ্য এখন বেশি পছন্দ। হস্তশিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা জড়িত। হস্তশিল্পজাত পণ্য সম্পূর্ণভাবে দেশি কাঁচামাল থেকে উৎপন্ন হয়। এসব কাঁচামাল গ্রামীণ পরিবেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়। এসব পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। আমদানিনির্ভর রপ্তানি পণ্যের তুলনায় অর্থনীতিতে বেশি অবদান রাখছে। গ্রামীণ পর্যায়ে এ খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থান হয়েছে। করোনার প্রভাবে বিশ্ববাজারে অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি আয় কমলেও হস্তশিল্প পরিবেশ-বান্ধব হওয়ায় রপ্তানি বাজার বেড়েছে। বিশ্ববাজারে হাতে তৈরি পণ্যের দামের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, চীন, ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হয়। গুণগত পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে হস্তশিল্পের রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।